‘কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়ায় না কিন্তু মারা গেলে সহানুভূতি জানিয়ে ভালো সাজে’

মোহাম্মদ ইশরাককে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর জামায়াত আমীর ডা..শফিকের উচিত তার বাসায় যাওয়া এবং শত্রুদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেওয়া যে মতভিন্নতা সত্ত্বেও ইশরাককে ধারণ করেন।
এখানে বলা দরকার যে, শহীদ ওসমান হাদিকে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছিল এক মাস আগে। এরপর জামায়াত আমীর ও ছাত্র শিবির যদি হাদির পাশে দাঁড়াতো তাহলে শহীদ হাদিকে হত্যা করা মোটেই সহজ ছিল না। বাস্তবে হুমকির কথা প্রকাশ্যে আসার পরও জামায়াত-শিবির পাশে না দাঁড়ানোটা খুনীদের জন্য গ্রিন সিগন্যাল।
এখানে বলা দরকার, বাংলাদেশের ভিন্ন মতাবলম্বী কোনো মানুষেরই বিএনপির কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশা করাটা বাতুলতা। তারা নিজেরা হত্যা না করলেও শহীদ হাদিসহ ডানপন্থী জুলাই যোদ্ধাদের হত্যা বিরোধী এমন না। বরং বিএনপির শীর্ষ নেতারা জুলাই যোদ্ধাদের হেরে যাওয়ায় খুশী হয়।
ইশরাককে রক্ষায় আমি জামায়াত-শিবিরের ভূমিকার কথা বলছি অন্য কারণে। ৭১এর পর থেকে বিগত ৫৪ বছর জামায়াত তার নেতাকর্মীদের রক্ষায় আন্তরিক ভূমিকা রেখেছে। খোদ শহীদ গোলাম আযম ৭২-৭৩ সালের নির্বাসিত জীবনে একদম মফস্বলে আশ্রিত কর্মীকে রক্ষায় কাজ করেছেন। চিন্তা করেন তখন মোবাইল ইন্টারনেট দূরে থাক ডাক যোগাযোগও অপ্রতুল ছিল। সেই সময় তিনি সৌদি আরব, ইংল্যান্ড থেকেও খোঁজ নিতেন।
যদিও আমার সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব বহু বছরের। আমাকে মেরে ফেললে জামায়াত আমীরসহ অনেকে খুশীই হবেন এবং এটি আমি নিজেও লজিক্যাল মনে করি, সেক্ষেত্রে আমার৷ বিষয়ে তাদের কোনো দায়ুিত্ব না থাকা ঠিক আছে, আমি নিজেও প্রত্যাশা করি না।
কিন্তু শহীদ হাদি কিংবা ইশরাকদের ইস্যু আলাদা। এদের কারো জীবনের শঙ্কা তৈরি হলে জামায়াত আমীরের সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। তিনি চাইলে জেনারেল ওয়াকারকে সরাসরি বলতে পারতেন যে হাদিকে না মারা হোক এবং এখন চাইলে ইশরাককে না মারার কথাও বলতে পারেন৷ সরাসরি বলতে বিব্রত হলে ইশরাকের বাসায় গিয়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ভারত ও সেনাবাহিনীকে বার্তা দিতে পারেন যে ইশরাককে মারা যাবে না।
অনেকের তেমন জানা নাই যে, ইনকিলাব মঞ্চ একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রতিষ্ঠান ছিল। তারা নিজেদের পয়সা আর ক্রাউন্ড ফান্ডিং করে চলে। তাদেরকে জামায়াত-শিবির ফান্ডিং কিংবা জনবল দিয়ে সহায়তা করতো না। এসব কারণে তাদের অনেকটাই দুর্দশা ছিল। আর খুনীরা এর সুযোগ নিয়েই শহীদ হাদিকে সহজ টার্গেটে পরিণত করতে পারছে।
শহীদ হাদির ভালনারেবল অবস্থার কথা স্মরণ রেখে জামায়াতকে বলতে চাই মোহাম্মদ ইশরাক ইন্ডিপেন্ডেন্ট হওয়ায় সে-ও ভালনারেবল, আপনারা তার পায়ে দাঁড়িয়ে শত্রুদের বার্তা দিন।
এম্নিতে জামায়াত চাইলে জুলাই যোদ্ধাদের জন্য একটা সহায়তা সেল গঠন করতে পারে। যার আওতায় নিরাপত্তাহীনতায় থাকা জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা প্রদানসহ প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা সম্ভব। এসব উদ্যোগ নিয়ে তারা সরকার ও জাতিসংঘের সহযোগিতা নিতে পারে।
বাংলাদেশে বর্তমানে নোংরামি হলো কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়ায় না কিন্তু মারা গেলে সহানুভূতি জানিয়ে ভালো সাজে।
দোয়া করি মহান আল্লাহর যেন মোহাম্মদ ইশরাকসহ সকল ব্রাদারানে হক্বের হায়াত দারাজ করেন। আমীন।
© খোমেনি এহসান। জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ

