Bd বাংলাদেশ

দেশ বিরাট সংকটে, উদ্ধারে বিএনপিকে ভূমিকা নিতে হবে: মান্না

প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:

দেশ এক বিরাট সংকটে, এখান থেকে উদ্ধারে বিএনপিকেই ভূমিকা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আমি বাস্তবতায় মনে করি, দেশ এক বিরাট সংকটের মধ্যে পড়েছে। এখন নির্ভর করবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাইয়েরা কী করেন? এই সংকট থেকে যদি মনে করেন এই সরকার জাতিকে উদ্ধার করবে…এই সরকারের সেই ক্ষমতাই নেই।’

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। দলটির প্রতিষ্ঠাতা আ স ম আবদুর রব অসুস্থ থাকার জন্য অনুষ্ঠানে আসতে পারেননি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি বলি, আজ সব দায়িত্ব বিএনপির ওপরে। আমি বিএনপি করি না, বিএনপির সব প্রস্তাব মানিও না। বিএনপি সব চেয়ে ভালো দল আমি তা-ও বলি না…। এর চাইতেও ভালো হতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ের জন্য এখন রিলে রেসের কাঠি বিএনপির হাতে। তাদের সেই ভূমিকা পালন করতে পারতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক জিজ্ঞাসা করেন আমাকে ওরা (জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন) এ রকম কাজ করল কেন? আমি মনে মনে বলি, ইট ইজ টু স্টুপিডিটি, বোকামি, নিবুদ্ধিতা, মূর্খতা। যদি বুঝতেন, তাহলে এটা বদলাবার আগে বিএনপির সঙ্গে কথা বলতেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতেন। কারও সঙ্গে তো কথা বলেননি। নিজের নিজের মতো করতে গেছেন…। এটা এখন হজম করতে পারবেন। যদি তারা মনে করেন একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন করলেই বিএনপি খুশি হয়ে যাবে, তা আমার মনে হয় না। সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রধানত বিএনপির।’

‘জামায়াত আন্দোলন আন্দোলন খেলছে’ অভিযোগ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা চেয়েছি, ডিসিশনগুলো, দ্বিমতগুলো জনগণের কাছে যাক। সরকার যে থুথু ফেলেছে সেই থুথু চাটবে আবার…আমি জানি না। কিন্তু তাদের তো চাটতে হবে। না হলে উনারা এভাবেই যদি করতে চান, বিএনপি যদি না মানে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভাই তো ভালো মানুষ, ভদ্রলোক…সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছে আন্দোলন করবেন। উনি বলেছেন না। জামায়াতের মতো আন্দোলন করব না।’

তিনি বলেন, ‘জামায়াত তো আবার আন্দোলন আন্দোলনে খেলে। কর্মসূচির নামে সভা করে বড় প্রোগ্রাম দেয় না। তারা জানে যে, এই প্রোগ্রাম মানুষ খাবে না। পিআর লোক বুঝে? বুঝে না। আর সেগুলো নিয়ে কথা বলে বুঝে? বুঝে না।কিন্তু বিএনপি যেটা বলছে, সেই জায়গায় যদি দাঁড়ান তাহলে কী পরিস্থিতি হবে?’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘আমি আবারও মনে করি, এই যে সংস্কার সংস্কার খেলা, ড. মুহাম্মদ ইউনূস করলেন এটার শেষ পরিণতি তিনি দিতে পারবেন না। এটা দিতে হবে এই মঞ্চে যারা আছে, তারা মিলে যথাযোগ্য পরিণতিতে গিয়ে একটা সফল নির্বাচনের আমাদের কাছে কোনো বিকল্প নেই। যদি নিজেরা ঝগড়া করেন, নিজেদের মধ্যে মারামারি হয়, তাহলে ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম’ বলে কবে কে হাজির হয়ে যাবে, তা আপনারা জানেন না। দেশ এখন এমন একটা সংকটের মধ্যে তখন আমরা নিজেরা যত বেশি ঝামেলা করব, তত অন্ধকারের মধ্যে যেই শক্তি লুকিয়ে আছে, তারা এসে আপনাদের অধিকার হরণ করবার চেষ্টা করে।’

তিনি বলেন, ‘জামায়াতের বন্ধুদের বলি, তার সঙ্গে যারা জোট বেঁধেছে তাদেরও বলি, সেই পরিস্থিতি যদি হয় তাহলে ৫৪ বছর পরে আপনারা শামুকের খোলস ভেঙে বাইরে বেরোতে পেরেছেন। আরেকবার ওই খোলসের মধ্যে ঢুকতে হবে। বিএনপির অতবড় লোকসান হবে না, আমাদের অতবড় লোকসান হবে না। কিন্তু লোকসান আপনাদের বেশি হবে। এ কারণে সব রাজনৈতিক শক্তিগুলোর কাছে আমার আবেদন…আজ আপনাদেরই শুভ বুদ্ধির পরিচয় দেওয়া দরকার। এই সংকট থেকে বেরিয়ে এসে যাতে আমরা যথাযথভাবে নির্বাচন করতে পারি সেটা আমাদের করতে হবে।’

‘নির্বাচনের বিকল্প নেই’ মন্তব্য মান্না বলেন, ‘আমাদের কাছে বর্তমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসবার জন্যে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি যখন গত বছর ৫ আগস্টে পরে পরেই বলেছি, নির্বাচন দিয়ে দেন তাড়াতাড়ি করে। তখন লোকে বিএনপিকে ভুল বুঝেছিলো…তখন বলেছি এখনো রক্তের দাগ শুকায়নি এরা এখনই নির্বাচন চায়। অথচ আজ এক বছর পরে সমস্ত মানুষ মনে করে নির্বাচন দরকার। এখন বিশ্বের যত শক্তি তারা মনে করে নির্বাচন দরকার। এই নির্বাচনের জন্য ওদের ওপরে নির্ভর না করে চলুন আরও বৃহত্তর ঐক্য করি।’

‘সরকারকে সমর্থন দিয়ে আমরা প্রতারিত হচ্ছ ‘ মন্তব্য করে জেএসডির সহসভাপতি আ স ম আবদুর রবের সহধর্মিণী তানিয়ার রব বলেন, ‘আমরা দলগুলো এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে কী হলো? প্রতিদিন আমরা প্রতারিত হচ্ছি। জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার পরে এখন নানা ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা ভাবছি যে, আমি কী ঠিক কাজ করলাম না?’

তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি বিষয়টা। এই জায়গায় কেন নিয়ে আসা হলো আজকে। যেহেতু আমাদের ঐতিহাসিক সত্যগুলো নেতারা বলেছেন। শুধু আজকে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য জীবন উসর্গ করেছেন, তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, আমি স্মরণ করছি এই দলের প্রতিষ্ঠাতা আ স ম আবদুর রবকে যিনি আমার জীবনসঙ্গী, এদেশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে একজন মূর্ত প্রতীক আর সিরাজুল আলম ভাইকে। তবু আমি বলব, আমরা যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে আদর্শের নিয়ে টিকে আছি আমাদের লড়াই চলবে। আমরা বিএনপির সাথে একসঙ্গে লড়াই করেছি, তাদের সাথেই থাকব।’

 

বার্তা বাজার/এস এইচ

 

প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট/আ/মু

Source: bartabazar.com

Leave a Reply

Back to top button