বিএনপি শরীয়াহ আইনে বিশ্বাস করে না: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) শরিয়াহ আইন বা মৌলবাদে বিশ্বাস করে না। ২০১৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারটি তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা জামায়াতের ব্যাপারে প্রশ্নের সম্মুখীন হই। কিন্তু বিএনপি জামায়াত নয়। বিএনপি শরিয়াহ আইনে বিশ্বাস করে না, মৌলবাদেও বিশ্বাস করে না। জামায়াতের ব্যাপারে আমাদের কোনো মোহ নেই।”
জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোটকে একটি ‘রাজনৈতিক কৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি ব্যাখ্যা করেন, “জামায়াতের সঙ্গে আমাদের জোট কৌশলগত। তাদের সঙ্গে থাকলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় এমন প্রায় ৫০টি আসনে আমাদের জয়লাভ করতে সুবিধা হয়। অপরদিকে, বিএনপিকে ছাড়া জামায়াত মাত্র তিনটি আসন পেতে পারে।”
সাক্ষাৎকারে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ভারতের সমর্থন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি ভারতের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, নির্যাতন ও গুমের রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগকে ভারত কেন এড়িয়ে চলছে না, তা আমি বুঝতে পারছি না। আওয়ামী লীগ একটি ঘৃণিত রাজনৈতিক দল, কিন্তু ভারতের কারণে তারা টিকে আছে।”
মির্জা ফখরুল আরও অভিযোগ করেন যে, ভারত আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেছে। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের পুলিশ ও আমলাদের সঙ্গে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সুসম্পর্ক রয়েছে।
ভারতের তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিএনপির আগ্রহের কথাও জানান তিনি। ফখরুল বলেন, “বিজেপি একটি ডানপন্থী রাজনৈতিক দল এবং সেখানে আরএসএসও (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) আছে। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।”