Bd বাংলাদেশ

এবার কি শিবির সভাপতি নির্বাচনে ‘রাবি সিন্ডিকেট’ ভাঙতে পারবে?

শিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা যেকোন হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমকক্ষ। কিন্তু মজিবুর রহমান মঞ্জু হলো এই শতাব্দীতে একমাত্র কেন্দ্রীয় সভাপতি যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসছে। সেই সবেধন নীলমনিটিও এখন দলত্যাগী। সাংগঠনিক ইতিহাস, ত্যাগ তিতীক্ষা, শাহাদাৎ, সংগ্রাম, লড়াই কোনকিছুতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে আলাদা না। দুই জায়গাতেই ধারাবাহিকভাবে শিবির কর্মীদের রক্ত ঝরেছে, দুই ক্যাম্পাসেই সমান মাত্রার শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি। সমান মাত্রার প্রভাবশালী।

বরং বাংলাদেশের ইতিহাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির সর্বপ্রথম ছাত্রসংসদ জিতেছিলো, সেই আশির দশকেই। এইটা হিসেবে নিলে চবির রাজনৈতিক গুরুত্ব রাবির চেয়ে একধাপ সামনেই থাকার কথা। কিন্তু দেখেন, বিগত ২০/২৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা শাখা সভাপতিরেও কেন্দ্রে অগ্রসর হতে দেয়া হয়নি। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আনা হয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডানা ছেটে দেয়া হয়েছে। একই সময় ধারাবাহিকভাবে এক/দুই সেশন অল্টারনেট করে করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একের পর এক নেতাকে পরিচিত করানো হয়েছে, ক্যান্ডিডেট লেভেলে সিলেক্ট করে এগিয়ে দেয়া হয়েছে, সেক্রেটারী সভাপতি বানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলের ছাত্রনেতাদের ব্যাপারে ইনসিকিউরিটি থেকে কলেজ থেকে আনা হয়েছে অল্টারনেট সেশনের গ্যাপগুলোতে।

এই সুস্পষ্ট নজির আর নিদর্শন দেখিয়ে দেবার পরেও রাজশাহী সিন্ডিকেটের শিবির নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারটা অস্বীকার করে যাবেন?
রাবি সিন্ডিকেট নিয়ে কথা উঠালে, ঢাবি থেকে কেউ সভপতি হতে না পারার কারন জানতে চাইলে – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সেই হাবিজাবি নানান কারনে নাকি আগেই ছুটি দিয়ে দেয়া হয় – এমন মিথ্যাচার করা হয়। অথচ দেখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কিন্তু কাউকে আসতে দিচ্ছেনা এরা।

এরপরও বলবেন, রাবি সিন্ডিকেট নাই? শিবিরের নেতা নির্বাচন রাবি সিন্ডিকেট ঠিক করে দেয়না?
শিবিরের সদস্যরা যদি প্রচলিত এই প্রি-ডিফাইন্ড নেতৃত্বের পাইপলাইন সিস্টেম নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে ভয় পায়, এইভাবেই চলতে থাকে, এই অন্যায় সিস্টেম কখনোই পাল্টাবেনা।
শিবির কর্মীদের এই আলাপকে নেগেটিভভাবে রীড না করার অনুরোধ জানাই। এই আলাপ তুলুন। যেটা অন্যায়, সেটা সাময়িক সুবিধা মনে হলেও আখেরে বড় ক্ষতি করবেই। ন্যায় আর অন্যায় সমান হতে পারবেনা, এটা আল্লাহর নির্ধারিত ন্যাচারাল পলিসি।

অন্যায় সিন্ডিকেট ভাংতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মীরা অগ্রগামী হোন ভাই। নিজেদের ওপর আরোপিত অভিযোগ হতে নিজ উদ্যোগে মুক্ত হবার মহত্ব দেখান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাউকে সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষেও আগামী ৬/৭টা সেশনে সভাপতি সেক্রেটারী বানায়েন না। নিজ তাগাদাতেই থার্ড/ফোর্থ পজিশন থেকে যেকোন মুল্যে ছুটি নিয়ে নেন ভাইয়েরা। আল্লাহ আপনাদের পুরষ্কৃত করবেন, এই সাহস করতে পারলে।

আগামী কয়েক সেশন খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে আনুন, আপনারাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অল্টারনেট করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একের পর এক কয়েকবার আসার ব্যবস্থা করুন।

দেশের দুর্বল এলাকা, বরিশাল ও মোমেনশাহী থেকে কয়েকজন ছাত্রনেতাকে উপরে নিয়ে আসার চেষ্টা চালান। বিশেষ করে বরিশাল থেকে একজন কেন্দ্রীয় সভপতি নিয়ে আসতে পারলে বরিশালের চেহারা পালটে যাবে।

এইসব কিছু করতে হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রানিং জনশক্তির ভূমিকা ছাডা সম্ভব হবেনা। ভাইয়েরা কি এই উদারতা দেখাতে পারবেন আগামী কয়েকটা সেশন? পারলে ভালো হতো। হেসে, তাচ্ছিল্য করে উড়িয়ে দিয়েন না। অনেক।কাহিনী আসলেই আছে। জানা বুঝার চেষ্টা করুন। ভুমিকা রাখুন, ইসলামী আন্দোলনের মৌলিক স্বার্থে..

Uchyony Daneshmand

Leave a Reply

Back to top button