কৃষক লীগ ক্যাডারের কারবার দখল করে চালান স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা

প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:
ধলেশ্বরী নদীর তীর ঘুরে দেখা যায়, ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর দুই তীরে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ৬০/৭০টি অবৈধ ইটের ভাটা। এসব ভাটায় ব্যবহৃত মাটি রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন তিন ফসলি জমি থেকে চুরি করা হয়। একটি সঙ্ঘবদ্ধ চোরচক্র রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে তা বিক্রি করে। এই মাটি দিয়ে নামিদামি ব্রিক ফিল্ডের ট্রেডমার্ক নকল করে দুই নম্বর ইট বানানো হয়।
ধলেশ্বরী নদীর মোল্লার বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মোল্লার বাজার ডকইয়ার্ডসংলগ্ন চোরাই মাটি ও দুই নম্বর ইট সাপ্লাইয়ের জন্য রাতের আঁধারে ফেরি চলাচল করছে। স্থানীয়রা জানান, তারা দিনের বেলায় কখনো ফেরিটি চলতে দেখেননি। রাত ৯/১০টার দিকে যখন গ্রামবাসী ঘুমিয়ে পড়েন তখন নৌযানটি চালু হয়। এরপর চলে ফজরের আজান পর্যন্ত।
ফেরিতে অবৈধ দুই নম্বর ইট বহনকারী একজন ট্রাক ড্রাইভার নাম না বলার শর্তে জানান, প্রতিবার ফেরি ব্যবহারের জন্য প্রত্যেক ট্রাক থেকে ৫০০ টাকা করে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আক্তার হোসেনকে দেওয়া হয়। এভাবে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এই ফেরি থেকে আদায় হয়। যা ইটভাটার মালিক পরিশোধ করেন ।
ফেরি চলাচলে দখল করা হয়েছে নদীর দুই তীরের ফসলি জমি। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা বাধা দিলে তাদের মারধরসহ হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অবৈধ ফেরির ড্রাইভার তন্ময়সহ দুজনকে আটকের পরে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, ফেরি চলাচলে যে খরচ হয়, শুধু সেই খরচ ইটের ভাটার মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, নির্বাচনজনিত বদলি হয়ে গত ৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানা থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় যোগদান করেছি। শুনেছি ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবৈধ ইটের ভাটায় চোরাই মাটি ও দুই নম্বর ইট বিক্রি এবং অবৈধ ফেরি চলাচল করে। আমি অফিসার পাঠিয়ে একাধিকবার এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছি। এরপরও যদি অবৈধ কার্যক্রম চলে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যে দলেরই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওমর ফারুক বলেন, মোল্লার বাজার ডকইয়ার্ড এলাকায় ফেরি চলাচলের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কোনো রকম ইজারা দেওয়া হয়নি। যদি এ ধরনের নৌযান চলাচল করে থাকে, তাহলে তা অবৈধভাবে চলাচল করছে। তিনি খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর পরিবহন বিভাগ) মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ধলেশ্বরীতে চলাচলরত ফেরি নিউ মদিনা ব্রিক মেনুফ্যাকচারিংয়ের কোনো অনুমোদন নেই। যে জমি ও নদী ব্যবহার করে ফেরি চলাচল করছে, সে জায়গায় ফেরি বেড়ানোর জন্য বিআইডব্লিউটিএ কোনো পন্টুন স্থাপন করেনি। শুল্ক আদায়ের জন্য কাউকে ইজারাও দেওয়া হয়নি।
বার্তা বাজার/এস এইচ
প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট/আ/মু
Source: bartabazar.com

