Bd বাংলাদেশ

গাজীপুরে মুসলিম কিশোরীকে অপহরণ করে লাগাতার ধর্ষণ হিন্দু যুবকের

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৩ বছরের এক মাদ্রাসাছাত্রীকে অপহরণের পর লাগাতার তিনদিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারের দায়ের করা মামলায় প্রধান অভিযুক্তসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার মূল অভিযুক্ত জয় কুমার দাস এবং তাকে সহযোগিতার অভিযোগে লোকনাথ চন্দ্র দাস নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী কিশোরীর প্রতিবেশী সঞ্জিত বর্মন ও তার স্ত্রী এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করেছে।

ভুক্তভোগী কিশোরী আশা মনির পরিবার কুড়িগ্রামের বাসিন্দা হলেও জীবিকার তাগিদে গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় ভাড়া থাকে। তাদের পাশের ঘরেই ভাড়া থাকতো টাঙ্গাইলের বাসিন্দা সঞ্জিত বর্মন ও তার পরিবার।

কিছুদিন আগে সঞ্জিতের শ্যালক লোকনাথ চন্দ্র দাসের ভাগিনা জয় কুমার দাস চাকরির খোঁজে তাদের বাসায় এসে থাকতে শুরু করে। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, তখন থেকেই জয়ের নজর পড়ে ১৩ বছরের আশা মনির ওপর। শারীরিক গঠনে ছোটখাটো হওয়ায় শিশুটির সঙ্গে জয়ের মেলামেশাকে প্রথমে তেমন গুরুত্ব দেয়নি তার পরিবার।

মামলার এজাহারে বলা হয়, জয় নিয়মিতভাবে শিশুটিকে চকলেট ও অন্যান্য উপহার দিয়ে এবং 함께 লুডু খেলার ছলে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে। এই মেলামেশার বিষয়টি প্রতিবেশী সঞ্জিত ও তার স্ত্রী জানতো এবং তারা শিশুটিকে উৎসাহ দিত বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

ঘটনার দিন শিশুটি মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে অভিযুক্ত জয়, তার মামা লোকনাথ এবং প্রতিবেশী সঞ্জিতের সহযোগিতায় তাকে মেলায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অপহরণ করে। এরপর লোকনাথের ভাড়া বাসায় নিয়ে গিয়ে টানা তিনদিন ধরে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এ সময় মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা-মা কালিয়াকৈর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর থেকে গত দুই মাস ধরে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের হুমকি ও চাপের কারণে তারা মামলা করার সাহস পাচ্ছিলেন না। ভুক্তভোগী শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যে, ঘটনার দুই মাস পরেও সে গুরুতর অসুস্থ।

অবশেষে স্থানীয় একজন আলেম, মাওলানা আনিসুর রহমানের সহযোগিতায় ও আশ্বাসে পরিবারটি সাহস সঞ্চয় করে এবং কালিয়াকৈর থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পরই তারা প্রধান অভিযুক্ত জয় কুমার দাস ও তার মামা লোকনাথ চন্দ্র দাসকে গ্রেপ্তার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অপরাধের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আদালতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে এবং মামলার অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এত বড় এবং স্পর্শকাতর একটি ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি গণমাধ্যমে সেভাবে প্রচারিত হয়নি। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।

Back to top button