মিথ্যা বলেছেন মাহফুজ আনাম; ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নয়া দিগন্তে আগুন দেওয়া হয়েছিল

প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:
সম্প্রতি প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের একটি বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন দৈনিক নয়া দিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে কোনো মিডিয়া হাউসে আগুন দেওয়া হয়নি—মাহফুজ আনামের এমন দাবিকে খণ্ডন করে নয়া দিগন্তের দপ্তরে ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া অগ্নিসংযোগের ‘দুঃসহ’ স্মৃতি ও ছবি সামনে এনেছেন তিনি।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে নজিরবিহীন হামলার নিন্দা জানিয়ে মাহফুজ আনাম মন্তব্য করেছিলেন যে, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এর আগে কখনো কোনো সংবাদপত্রের কার্যালয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। তাঁর মতে, এটি দেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটা একটি চরম ন্যক্কারজনক ঘটনা।
মাহফুজ আনামের এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে মাসুমুর রহমান খলিলী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা ১৩ মিনিটে হোটেল ইডেন কমপ্লেক্স সংলগ্ন নয়া দিগন্ত অফিসে সংঘটিত অগ্নিসংযোগের ছবি প্রকাশ করেন।
ছবিতে দেখা যায়, তৎকালীন নির্বাহী সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর এবং বার্তা সম্পাদক আজম মীরের নেতৃত্বে কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। প্রেস থেকে অগ্নিদগ্ধ বিশাল কাগজের রোলগুলো বের করে আনার দৃশ্যও সেই ছবিতে ফুটে উঠেছে।
খলিলী তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, গণমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা এবারই প্রথম নয়; বরং অতীতেও সংবাদপত্রকে এ ধরনের ভয়াবহ সহিংসতার শিকার হতে হয়েছে।
গণমাধ্যমের ওপর বর্তমান হামলার নিন্দায় দুজনেই একমত। মাসুমুর রহমান খলিলী বলেন, “কোনো গণমাধ্যম অফিসেই হামলা বা অগ্নিসংযোগ দেশ, গণতন্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কাম্য হতে পারে না। এটি দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতাকেই নষ্ট করে।”
শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতায় বর্তমানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মাহফুজ আনাম যেখানে বর্তমান হামলাকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন, খলিলী সেখানে মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, ভিন্নমতাবলম্বী গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণের সংস্কৃতি বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের। বিশ্লেষকদের মতে, তথ্যগত অসংগতি থাকলেও উভয় সম্পাদকের বক্তব্যই প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশে মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক ও সামাজিক সুরক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট/আ/মু
Source: dailyjanakantha.com

