পিকনিক-ট্রেনিংয়ের আড়ালে প্রায় ১০০ মুসলিম তরুণ-তরুণীকে ’খ্রিস্টান’ বানানোর ভয়ঙ্কর অভিযোগ

প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:
সীমান্তবর্তী উপজেলার কয়েকটি গ্রাম থেকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে নারী–তরুণদের পিকনিক/ট্রেনিং টেলিয়ে নিয়ে গিয়ে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছে একটি সংগঠিত চক্রের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন—মূল সমন্বয়কারী বাবলুর রহমান এবং তার সহযোগীরা গ্রাম থেকে নায়েকচিহ্নিত যুবক-যুবতীকে নিয়ে গাজীপুরের এক চার্চে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করেন।
ভুক্তভোগীদের বর্ণনা অনুযায়ী, প্রথমে পিকনিক বা ট্রেনিংয়ের নামে চলে প্রলোভন, খাবার, টাকা বা অন্যান্য সুবিধা দেখিয়ে তাদেরকে ঢাকাগামী করে। সেখানে জামা–কাপড় বদলে নিয়ে যাওয়া হয় এবং “কিতাবুল মুকাদ্দাস” (বাইবেল) হাতে দিয়ে ধর্মীয় অনুশীলন করানো হয়। কেউ যে অভিমত জানায় না, তাদেরকে পানিতে ডুবিয়ে তুলে (বপ্তিস্মা) খ্রিস্টান করা হয়—ভুক্তভোগীরা বলেন, “এই বইটা দিয়ে হাতে দিয়ে আবার ডুব মারায় তোমরা খ্রিস্টান হয়ে গেছো” ইত্যাদি বলা হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, যারা রাজি নয় তাদেরকে পুনরায় ইসলাম ধর্মে ফেরার জন্য চাপ দেওয়া হয়নি; বরং তারা ধ্রুবভাবে বলছেন যে তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। এক মহিলার কথায়—“আমাদের হাতে বইটা ধরে ডুব করিয়ে বলল তোমরা খ্রিস্টান হয়ে গেছো। আমরা কোনোদিন খ্রিস্টান হতে চাইনি।”
দীর্ঘ বর্ণনায় দেখা যায় পরিবারের জীবন ব্যাহত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে আক্তারুল ইসলাম নামে এক দশম শ্রেণীর ছাত্র বলেন ঘরবন্দি জীবন, মানুষের লজ্জা, এমনকি আত্মহত্যার চিন্তা পর্যন্ত এসেছিল। খাদিজা খাতুনের পরিবারে বিবাহের সংকট দেখা দেয়; মেয়ের জামাই ও বরের দাবি-দাবি এবং তালাক সংক্রান্ত ভয়-অশান্তির কথাও উঠেছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও আতঙ্কিত গ্রামবাসী দ্রুত জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন। একজন ভুক্তভোগীর কণ্ঠে “আমরা চাই যে তাদের শাস্তি হোক; কেন আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে এভাবে ধোঁকা করা হল?”
অভিযোগের সূত্র ধরে দীপ্ত সমাজকল্যাণ সংস্থার (দীপ্ত সমাজকল্যাণ সংস্থা) অফিসে গেলে অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া যায় এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা সরাসরি সাক্ষাৎ দিতে পারেননি। সংস্থার নাম যুক্ত থাকা এক ব্যক্তি মাকাপুর গ্রামের আজানুর বলেছেন, তিনি পিকনিক/ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্যে কাউকে নিয়ে যাননি; তার বলেন, “ট্রেনিংয়ের জন্য আমার বললে আমি জোগাড় করে দিয়েছি” এবং তিনি অভিযোগ সত্য না কি মিথ্যা, তা যাচাই করতে পারছেন না।
অফিস ও বাবলুর রহমান বাড়ি তালা থাকায় সরাসরি যোগাযোগ করা যায়নি; পরে মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়। গাজীপুরের ওই চার্চে গিয়ে ফাদার জেমস বলেন, ধর্ম প্রচারের স্বাধীনতা সবার আছে; কিন্তু প্রতারণা বা জোরপূর্বক ধর্মান্তর করার কৌশল তাকে ন্যায্য করা যায় না। চার্চ কর্তৃপক্ষ সম্পর্কিত যে কোন জটিল বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত তেমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় আলেম সমাজ ও ধর্মীয় নেতারা বলেছেন, কৌশলে ধর্মান্তর ঘটলে তা আইনগতভাবে মোকাবিলার দাবি উঠবে। একই সঙ্গে কিছু ইমাম-হুজুরদের কাছে ভুল বুঝে যারা অন্য ধর্মে যাওয়া হয়েছে, তাদের জন্য তওবা ও পুনরাগমন সম্ভাব্য বলে মতামতও এসেছে বলে প্রতিবেদনেও দেয়া আছে।
চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন ঘটনাটির প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা কিছু বাচ্চার নাম পেয়েছি এবং ঘটনা সত্যতা পেয়েছি। যদি ভিকটিমের পরিবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিয়ে থানায় আসেন, আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
জেলা প্রশাসক মোঃ ম্মদ আজহারুল ইসলাম জানান, অভিযোগ তাদের নজরে এসেছে এবং ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেলে দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন—এটি একটি ধর্মীয় বিষয়; অভিযোগ পেলে আলেমদের সঙ্গেও আলোচনা করে সমাধান খোঁজা যেতে পারে।
ভুক্তভোগী পরিবার, গ্রামবাসী ও স্থানীয় নেতারা দাবি করছেন:
* অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
* কৌশল করে ধর্মান্তরিত করার পথ বন্ধ করার জন্য তদন্ত-নির্ভর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
* ভুক্তভোগীদের মানসিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করতে হবে।
*নির ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন*—কৌশলে ধর্মান্তরিত করা হলে সমাজে বিবাদ, পরিবার ভাঙন এবং ব্যক্তিজীবনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। তারা চান সংশ্লিষ্টরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেয়—তা যেন ভবিষ্যতে কারও সঙ্গে এমন আচরণ করা না হয়।
বার্তা বাজার/এস এইচ
প্রবাস কন্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট/আ/মু
Source: bartabazar.com

